কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপ: যুক্তরাজ্যে কাজ করার সুযোগ, যোগ্যতা ও সুবিধা

কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপ: কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপের ঘোষণা দিয়েছে, যার মাধ্যমে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকেরা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পেশাগত উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এই ফেলোশিপে প্রতি মাসে লিভিং অ্যালাউন্সসহ ভিসা ফি, যাতায়াত ভাতা ও উড়োজাহাজ টিকিটের মতো আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। কীভাবে আবেদন করবেন, যোগ্যতা ও আর্থিক সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

পেশাজীবীদের জন্য নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন সেই সুযোগটিই নিয়ে এসেছে কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপের মাধ্যমে। এই ফেলোশিপ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর পেশাজীবীদের যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার এবং নিজেদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ করে দেয়। যারা নিজেদের ক্যারিয়ারকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে চান, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ।

এই আর্টিকেলে আমরা এই ফেলোশিপের জন্য আবেদনের যোগ্যতা, আর্থিক সুবিধা এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আবেদনের যোগ্যতা: কারা আবেদন করতে পারবেন?

এই ফেলোশিপের জন্য আবেদন করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হবে:

  • নাগরিকত্ব: প্রার্থীকে অবশ্যই কমনওয়েলথভুক্ত দেশের স্থায়ী নাগরিক অথবা শরণার্থী মর্যাদার হতে হবে।
  • কর্মরত অবস্থা: আবেদনের সময় প্রার্থীকে অবশ্যই কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে হবে। ফেলোশিপ শেষে তাঁকে আবার তাঁর আগের কর্মস্থলে যোগ দিতে হবে।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: আবেদন করার জন্য প্রার্থীর ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।
  • রেফারেন্স: আবেদনপত্রের সাথে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের দুজন ব্যক্তির নাম রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করতে হবে।

আর্থিক সুবিধা ও ভাতার বিস্তারিত

কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপটি আর্থিক দিক থেকে অত্যন্ত লোভনীয় এবং ফেলোর সকল খরচ বহন করে। এতে যেসকল সুবিধা অন্তর্ভুক্ত:

  • উড়োজাহাজ টিকিট: যুক্তরাজ্যে যাওয়া এবং নিজ দেশে ফেরার জন্য সম্পূর্ণ উড়োজাহাজ টিকিট দেওয়া হবে।
  • ভিসা প্রসেসিং ফি: ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রসেসিং ফি-ও এই ফেলোশিপ থেকে প্রদান করা হবে।
  • লিভিং অ্যালাউন্স: ফেলোদের জীবনযাপনের জন্য প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতা দেওয়া হয়:
    • ২,১০৪ ব্রিটিশ পাউন্ড (প্রায় ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৬৭৬ টাকা) মাসিক ভাতা
    • তবে, যদি ফেলোশিপটি লন্ডন মেট্রোপলিটন এলাকায় হয়, তাহলে মাসিক ভাতা বেড়ে ২,৬১২ ব্রিটিশ পাউন্ড হবে।
  • যাতায়াত ভাতা: ফেলোশিপ চলাকালীন সময়ে যুক্তরাজ্যের মধ্যে যাতায়াত এবং বিভিন্ন সভায় যোগ দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ২,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত ভাতা দেওয়া হবে।

কীভাবে আবেদন করবেন?

আগ্রহী এবং যোগ্য প্রার্থীরা শুধুমাত্র অনলাইনের মাধ্যমেই এই ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

  • আবেদন পদ্ধতি: কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের পদ্ধতি এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্যের জন্য কমিশনের ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন।
  • আবেদনের শেষ সময়: বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী আগামী ২২ আগস্ট, ২০২৫ বিকেল চারটা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।

এক নজরে গুরুত্বপূর্ণ তারিখ ও তথ্য

বিবরণ তথ্য
ফেলোশিপের নাম কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপ
আবেদনের সময়সীমা ২২ আগস্ট, ২০২৫ (বিকেল ৪টা, বাংলাদেশ সময়)
আবেদন পদ্ধতি অনলাইন
যোগ্যতা কমনওয়েলথ দেশের নাগরিক, কর্মরত, স্নাতক ডিগ্রি
মাসিক ভাতা ২,১০৪ পাউন্ড (লন্ডনে ২,৬১২ পাউন্ড)
আবেদনের ওয়েবসাইট কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট

কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপ বাংলাদেশের পেশাজীবীদের জন্য একটি অসাধারণ সুযোগ। এটি শুধু আর্থিক সুবিধাই দেয় না, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করার এবং একটি শক্তিশালী পেশাগত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলারও সুযোগ করে দেয়। যারা নিজেদের ক্যারিয়ারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ পদক্ষেপ হতে পারে।

সূত্র: https://cscuk.fcdo.gov.uk/scholarships

আরও পড়ুনজাপানে উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থান: ৩ বছরে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী পাঠানোর পরিকল্পনা

1 thought on “কমনওয়েলথ প্রফেশনাল ফেলোশিপ: যুক্তরাজ্যে কাজ করার সুযোগ, যোগ্যতা ও সুবিধা”

Leave a Comment